ঘরে ফেরা – ৯৮
ছুটি ছুটি করে হঠাৎ ছুটি হয়ে গেল।
এমন ভাবেই কত বছর দেওয়াল পিছনে ফেলে
দেরি হলেও অবশেষে সত্যিই ঘরে ফেরা
সাঁঝের আকাশ লাগলে আঁধার, প্রদীপ রেখ জ্বেলে।
হারায় নি কিছুই, মাগো,
ছেলে তোমার যেমন ছিল তেমন আছে ঠিক
যেমন ছিল নাক, কপাল ছিল বিরাট,
বলত পাড়ার সবাই ,
ছেলে রাজ-পুত্তর বটে।
কালের ঘোড়ার লাগাম তাই আজ রাষ্ট্র-রাজের হাতে
জ্যোৎস্না-ভেজা বরফ পথে চলছে জীবন-রথ
নীহারিকার কালো হিমে আলো হব বলে
বিশ্বাসী বুক পায়ে দলে সেই হারালাম পথ।
চাকরি হল আমার,
প্রতিদিনের ভোরের বাতাস বিক্রি হল আমার !
অবিশ্রান্ত লেফট রাইট লেফট রাইট,
কদম কদম বাঢ়ায়ে যা...
( জাড্যকঠিন শরীর আমার
সরলরেখায়
নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র মেনে
চিরন্তন একই গতিবেগে গড়িয়ে চলে )
আমি, গ্রহ হতে চাইনি মা
সূর্য রঙে রাঙা হয়ে নিত্য গতিপথে
আবহমান কালের চাকায়
ঘুরতে আমি চাইনি মা।
(ওরা মন্ত্রপুতঃ যন্ত্রনরের দল
বন্ডে চাপা নথির নিচে ইঁদুর মারার কল)
বেলা বুঝি গেল,
আমার সন্ধ্যা হয়ে এল, মা !
সারাদিবস যুদ্ধ শেষেও ছুটি দিল না।
তবে
রাজপুত্র হতে হবে যে !
বীরের ধর্ম বীর্য !
মার কোল থেকে লাফ দিয়ে উঠে ছিঁড়তে হবে যে সূর্য !
পিতার হাতে দিতে যে হবে তুলে
বিজয়ের পথে কুড়িয়ে নেওয়া সোনার ঝাঁপি খুলে ।
( অস্ফুট শব্দে আচমকাই কেঁপে উঠল পৃথিবী
লালাশূন্য বন্ধ মুখে অসংখ্য শব্দ ফেনা হয়ে বেরিয়ে আসতে থাকে
জাতীয় পতাকা বুকে গেঁথে তারপর হঠাৎই স্তব্ধ হয়ে গেল )
নিঃশ্বাসে আজ ভরে নিয়েছি তেজঃস্ক্রিয় বিকিরণ
মগজের ঘিলুতে এটাক সফটওয়ার
শিরায় শিরায় এভিয়েশন টারবাইন ফুয়েল...
আকাশ পথে তাকাও মা, আমি আসছি...
যেন কত বছর হল
ছুটি ছুটি করে হঠাৎ ছুটি হয়ে গেল।
১৫ জানুয়ারী ১৯৯৯
নতুন দিল্লি
No comments:
Post a Comment