Saturday, December 28, 2013

আমার কৈফিয়ত 2

আমার কৈফিয়ত  // পীযূষকান্তি বিশ্বাস

দু হাতে এত ডলেছি মাংস
দু পায়ে এত করেছি মার্চ
হিসাব মিলাতে গিয়ে দেখি, 
বে-হিসাব বাম ডান।

কি লিখব ভাষা জানিনা আর কায়দাটা ও শিখিনি
বেকায়দা ইচ্ছা টা তাই
বোঝানো মুস্কিল ।

কতদূর দিল্লি,
কেউ ডাক দিয়ে গেল সেই
চলেছি দুপায়ে নিয়ে মার্চ,
হোঁচটের পর হোঁচট
অস্ত্র ধরেছি হাতে, খেয়েছি গুলি ও,
বদহজমে দেখি
পেট গুলিয়ে যায় ।

এভাবেই খুঁজেছি ছাউনি থেকে ছাউনি
হয়রান ধুলো পথ,
রণক্ষেত্র জুড়ে আবেগী রক্ত-নদি
চেনাবের গিরিখাত ।

কখনো মাথায় ছুঁয়ে যায় রাডারের আন্টেনা
কখনো ছুঁয়ে যায় কামানের গোলা মাথার চুল
ছুঁয়ে যায় কবিতা ভাবনা ও
অসহায় পেন্সিল ।

মাঠে পড়ে ক্ষেত , সৈনিক শষ্য
মাঠে পড়ে সহস্রাধিক লাশ
মাঠ ঘুমায় বুকে শতশত ক্ষত নিয়ে
ট্রেঞ্চ ভর্তি ইতিহাস ।

উড়ছে ধুলোঝড় ট্যাক্সি ট্রাকে, রান-ওয়ে জুড়ে সাদা বক
উড়ছে সোনালি ডানার চিল , উড়ছে পত পত করে পতাকা,
জাতীয় সংগীত ।

এই বুঝি আকাশ ভেঙ্গে পড়ে, রাত্রি মুছে ফেলে ঘুমের ঘাম
পাছে চার্জসীট হয়ে যায়, ভয় হয় পেট বাঁচানো দায় ।

বলিদান আমার স্বাধীনতা ,
এমন ই অদ্ভুত উদ্ভিদ প্রেম
প্রান টা বিক্রি করে হাটে 
মনুষ্য জীবন কিনে খাই ।

গুনগুনায় বারুদের ধোঁয়া, গুনগুনায় কামানের ব্যারেল
মগজে ঢুকছে গরম সীসা,মগজে পিতল বারুদ ইচ্ছা
বাবাগো গেলুম ধর না কেউ, এ আবার বিকট যে ভীমরতি
বাবাকে ধরল চেপে উত্তপ্ত যৌনতা
কফিনে শুয়েও প্রেম ।

বসেছে বাপে সিংহাসনে, কি অদ্ভুত সাপের মাথায় তাজ
বসেছে পংগপালের ভীড়ে
পন্ডিত মহারাজ ।

এমনই রক্ত হল বিষ, ভয়ংকর ইগো বইছে খাদে
এমনই আগুন ভরা মাইন
রোমকুপে বিপাশা-সিন্ধু-শতদ্রু ।

এদিকে জ্বলন্ত হেলিপ্যাড, গুজনেক, অগ্নি,  চিতা
চেতকের স্কোয়াড্রন উয়িং
কি করি আমরা একলব্যর দল ?

পেছনে গুপ্তচর পড়ে আছে,
নিন্দুকের অভাব কোথায় নাই , পাছে লোকে কিছু কয়,
তবুও
পাছায় এয়ার ট্রাফিক ওয়েল ঘসে এয়ারম্যান দৌড়ায় ।

শিরায় শিরায় ঠাসা বারুদ, আগুনের নদি চুবিয়ে সুরায়
আমৃত্যু নেশার, এ কিসের লড়াই ?

লড়াই পন্ডিতের সাথে সিপাই
নাকি
লড়াই জীবনের সাথে সৈনিক ?
নাকি
লড়াই জীবনের সাথে মৃত্যুর ?

জীবনে মাটি চেটে দেখিনি,  তার জীবনে দেশপ্রেম হল মিছে
জীবনের স্বাদ ই আলাদা, বুঝবেন হে মশাই ?
কে বোঝে মেরা দেশ মহান
বোঝা মুস্কিল রাষ্ট্র-স্বাধীনতা
কে বোঝে হিন্দু না মুসলিম ? ওরা তো সর্বহারা অভিজাত ?

এই সব ছারপোকা রাজনীতি
লুটে বাড়ে রক্তবীজের ঝাড়
আমাদের দেশপ্রেমী বিধাতা,  বটবৃক্ষ,  তরুলতা
জনতা খাবি খায় ।

চিমনি র মুখে সাইরেন শংখ
মিছিলে লুকায় সমাজতন্ত্রী মুখ
লাগা না, চিমনি র মুখে হ্যারিসন তালা ...
শালারা কজনই বা হবে ? 
কি জানি হাতে গোনা আঙ্গুল
শালারা তবুও কি ভাবে
আঙ্গুলে নাচায় ?

আমাদের মুখে কি আর ঘি সক্কর ? ভাগ না,  পায়ুর ভ্রু ।
মনে হয় কানে আঙ্গুল দি, আকাশের গায়ে ঠেকিয়ে পা
মনে হয় মুখে ঠেসে ধরে, দু ফোটা, চিরিক চিরিক দি ।

নয় সবাই হানাদার শত্রু, বড় প্রেম দেশপ্রেমে বলিদান
বড়দান পেটে পড়লে দানা
উপপাদ্যের মুল ।

ভাগে কি কম পড়ে যায় কার ,
বুকের উপরে ছাপানো মানচিত্র, এক নদি রক্ত বয়ে যায়
ভাগীরথী ভোগ্য সবার ই , কারা যে রেখা টেনে যায় ?

বেড়ে চলে যমের মত ভয়, আমার যে প্রতি ভোরে খিদে পায়
বেড়ে ভাত খাওয়ার শক্তিও নাই
আমাদের বাড়া ভাতে ছাই ।

পাহারা কাকে ? বা কার , কেন
পা হারায় দুপক্ষেরি ফৌজ
পাহাড়ের খাদে খাদে জমে, জীবাশ্ম ইতিহাস ।
শহীদের রক্ত জমে জমে
শহীদ মিনার ।

আর বলতে পারিনা ভাই
মাথার চুল ছিড়েছি খুব, আমার এই ঘিলুটাও পচে সার,
স্নায়ুতে অচেনা ভাইরাস
মাথাটার সেকেন্ডারী স্লেভে
সিডি আটকে যায় ।

কি হবে যুদ্ধে, করব না মার্চ
পরোয়াও করিনা কারো, কিছু আর
রাস্ট্র মুখে পুরীষ এক রাশ...

ভাগাড়ে থাক না পড়ে পরমবীর-চক্র টি 
থেকে থেকে ক্রিমেশন প্যারেডে
শহীদ হে অমর ?

কুড়ি বছর গারদ সময় কাল
কুড়ি এই হয়ে এল শেষ
কুড়িয়ে নেবে ইতিহাস
পসথুমাস কর্পোরাল ।

Tuesday, December 24, 2013

রাইফেল

রাইফেল

সালামী সাজে স্যালুট করলে
দিগ্বীজয়ী রাইফেল ও আকাশ দেখতে পায়,
কারাকোরামের গায়ে
শরীর এলিয়ে দিয়ে ঝুঁকে থাকে স্থির
নত মস্তক পামীর মালভুমি ।

গর্দনটা নিচে ঝুঁকিয়ে দেখলে মাটি দেখা যায়
যেখানে ঝরে পড়ছে প্রতিদিন
পরাজিত ঘাম ।

আমারও একটা শরীর আছে
এলিয়ে দিলে প্রেমিকার তুষার বুকে
সাদা চাদর বিছিয়ে দিনের শেষ আলোয়
ঘুমের দেশ অপেক্ষা করে
বরফ বিছানায় ।

ওখানে কিছু স্নোবুট
ওখানে আরো কিছু সৈনিকের পায়ের শব্দ হঠাৎ

স্যালুট !  

রক্তরঙের এক পতাকাকে সামনে রেখে 
মার্চ করে যাওয়া র‍্যাংক ও ফাইল
লেফট টার্ণ নিয়ে এসে দাঁড়ায়

তিন বার গুলিছোড়ার আওয়াজ হয়
উপত্যকা প্রতিধ্বনিত করে কারাকোরাম
সাক্ষী হয়ে থাকে ।

০৫ ডিসেম্বর ২০১৩ 
মহাবীর এনক্লেভ, নতুন দিল্লি

Friday, December 6, 2013

বিদায়ী সঙ্গীত

বিদায়ী সঙ্গীত / পীযূষকান্তি বিশ্বাস

পংক্তি যখন ত্বরণ হারায় 
নশ্বর কবি থমকে দাঁড়ায়
কমা , দাড়িতে, ক্লান্ত দু-পায়
কি আর করি তখন
যুদ্ধ যুদ্ধ যুদ্ধ যুদ্ধ করে মন।

জীবন ঢেলেছে ভাড় মে মরণ
হিতৈষীর বুকে রক্ত ক্ষরণ
গিটারের রণণ মিলেছে রণে
তোমার কোরাসে আমার চরন

গলা বুজে আসে বন্ধ হয় ভাষা
সুর উবে জাগে কন্ঠে পিপাসা
দুচোখে শুকায় স্বপ্ন আর আশা
শুকায় সঞ্জীবন

সংগীত যখন থমকে দাঁড়ায়,
সুর হীন সুরা দুহাত বাড়ায়
পিছন ঠেকিয়ে দেয়ালের গায়
কি আর করি তখন ?
যুদ্ধ যুদ্ধ যুদ্ধ যুদ্ধ করে মন।

Thursday, December 5, 2013

সিজ ফায়ার

সিজ ফায়ার 


নালিপথে প্রতিনিয়ত ঘুর্ণির,
রৌদ্রময় কোনএক যুদ্ধক্লান্ত দিনে
মেঘে ভিজে গেছে বারুদ ।

আগুনে আজ তার কোন লালসা নেই
দেশপ্রেমে নিঃশেষ
পিতল হাতে মাধুকরীতে বেরিয়েছে
ভিক্ষা পাত্রে পড়ে আছে খালি কার্তুজ
একটি দুটি ক্ষুদ্র মৃত্যু...

গৈরিক সাক্ষী এই পাহাড়ী গাঁও ,
ধবল পতাকা বিছিয়ে হিমশীতল জানুয়ারী
রোদ ঝড় বৃষ্টিতে,
একই ভাবে দুধারে দুপায়
সাক্ষী কারাকোরাম ।

এর পর
পাদদেশে এক পশলা যুদ্ধ সেরে নিয়ে
সৈনিকেরা রাইফেল উল্টো করে
বাটে বাটে টুপি ঝুলিয়ে
যে যার মত ক্যাম্পে চলে যায়


বারুদ ঘোষনা করে

সিজ ফায়ার ।

১৫ নভেম্বর ২০১৩ 
মহাবীর এনক্লেভ, নতুন দিল্লি

জলজ শ্যাওলা


জলজ শ্যাওলা

বুকেরই উপর এফোঁড়-ওফোঁড়
এক বিঘত জমি
গাড়া আছে এক বাঁও বাঁশ
উড়ছে জাতীয় পতাকা

ভু-ফোঁড়ে জনকের
প্রতিনিয়ত এই রকম শহীদ প্রসব

হা ঈশ্বর,
কে নিয়ে আসে এদের সংগ্রামী মৃত্যু ?

এ মাটি নয়তো প্রেম
এ পতাকা নয়তো কোন স্বাধীনতা
এ কোন ঘরের নিরাপত্তা বা রুটির কোন অভিযান
দারুচিনি দ্বীপের খোঁজে রণতরী যাত্রা ।

কোন এক ঘন কুজ্ঝটিকায়
যেন হঠাৎই আবিষ্কার করি আমাকে
আমার শরীরে নতুন উর্দির আবরন
ডোরাকাটা বাঘছাল,
কোমরে বেল্ট

এ কোন র‍্যাডক্লিফ নয়,
এ নয় কোন ম্যাকমোহন
সমগ্র সমুদ্রতট জুড়ে আন্তঃপ্রজাতির
সংগ্রাম মানচিত্র

বেলাভুমিতে আমারই পুর্বপুরুষের পদচ্ছাপ
দ্রাঘিমা থেকে দ্রাঘিমায়
যোগ্যতমের উদবর্তনে মার্চ করতে গিয়ে দেখি
বুটে বুটে জড়িয়ে আছে


জলজ শ্যাওলা ।

১১ নভেম্বর ২০১৩ 
মহাবীর এনক্লেভ, নতুন দিল্লি