Wednesday, December 9, 2009

ঝিনুকের মুক্তা

ঝিনুকের মুক্তা

কার্তুজের আগুনে পোড়ে আধ ভাঙা চাঁদ
গ্লেসিয়ারের পারে আগুন বিছানো মাইনাস ।

আধা তরল ঘুমে সার সার বাঁধা সান্ত্রী,
উল্কার ফুল্কির উপরে এইচ ইউ ডিসপার্সাল
ডিসেম্বরের রাত্রি যেন ডিগবাজী খায়

এ যেন ভেল্কি, লাগবি তো লাগ !

চমৎকার চমৎকার ! !
অঝোরে ঘুমায় ঝিনুক বিতস্তার কাদায়।

নাইট প্যাট্রোলের হেপ্টর 
উড়ে যায় সীমানা পেরিয়ে
ভয়ংকর অন্ধকার ব্যুহ, তোলপাড় করে নীরবতা
সীমানা রক্ষার ভারে ভাঙে
রেখার সরলতা ।

ঢেউ তোলে সিন্ধু, 
তরঙ্গে তরঙ্গে ভাসিয়ে নিয়ে 
অবিরাম  গোঙানোর আওয়াজে পাড় ভাঙে বিপাশার

পাড় ভাঙে 
ঝিনুকের দু ঢালের মাংসল আবডালে
ভিতরে বেড়ে ওঠা মুক্তা,
নাকি মুক্তি ? 

চমৎকার চমৎকার ! !

লাগ ভেল্কি লাগ
কার্তুজের আগুনে পোড়ে আধ ভাঙা চাঁদ
সমস্ত লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল জুড়ে
গ্লেসিয়ারের সফেদ বরফ যখন তুলো তুলো মাইনাস
পোয়াতি হৃদয় আমার কুরে কুরে খায় ।
অঝোরে ঘুমায় ঝিনুক বিতস্তার কাদায়।


২৯ মার্চ, ১৯৯৭
সতওয়ারী, জম্মু

Monday, December 7, 2009

রংগুলি ও পূজা

রংগুলি পূজা

রংগুলি ও পূজা


সোনা সোনা আকাশ
পিতল পিতল গুলি
লাল লাল রক্ত মেখে
ঘুমাল গোধুলি

সাদা সাদা প্রান্তর
সবুজ সবুজ প্রাণ
বরফে আর পা চলে না
হাতে ম্যাসিন গান

কালো কালো গর্ভে
আলো আলো বীজ
পূজা আমার সাঙ্গ হল
খোদা হাফিজ


১৬ জুন , ১৯৯৭

সতওয়ারী, জম্মু

রেডিমেড সেন্ড অফ

রেডিমেড সেন্ড অফ


অধৈর্য হবেন না,
অল্প ক-লাইনে শেষ করে দেব এই কবিতা
খুব কি বেশী ব্যস্ততা ? টানাপোড়েন ?
দাঁড়ান না, বেশী সময় নেব না, মাত্র দুলাইন বাকি আর
ফ্রন্ট লাইনের লোডিং শুরু হয়ে গেছে...
আর এই টি , লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে
শহীদ হতে যাচ্ছে।

২৬ জুলাই , ১৯৯৭
সতওয়ারী, জম্মু

পান্তা


পান্তা



এ গল্পটি পান্তা ভাতের পুরানো কাহিনী
জলে ও স্থলে, অন্তরীক্ষে সৈন্য বাহিনীর

বাসি থালা, হাভাতে ঘর, নেই পান্তায় নুন
শান্তির অন্বেষণে যুদ্ধ জ্বালিয়ে আগুন ।

নুনের খোঁজে ঝরে গেল লবনাক্ত ঘাম
পাকস্থলী ধুকছে ক্ষুধায় , মগজে সংগ্রাম ।

গুলি বন্দুক ব্যাটেল ট্যাংকি কামানের গোলা
বারুদে রান্না হবে পটল তোলা ।

মৃত্যুস্বাদ ! এক অতৃপ্ত জিভ !  রক্ত ঝরা লাল

পান্তা ভাতই ছিল ভাল পুড়িয়ে কপাল ।

২১ জুন , ১৯৯৭
সতওয়ারী, জম্মু

অস্ত্র সমর্পণ


অস্ত্র সমর্পণ

করবো না মার্চ আর যাব নাকো ফ্রন্টে
শান বাঁধা রানওয়ে হোক উত্তপ্ত
নুন খাই ধরি গান আরক্ত কন্ঠে
বাঁধা হাত, বাঁধা মাথা, বাঁধা নহে রক্ত


লেফট রাইট পায়ে পায়ে বিদীর্ণ পৃথ্বী
পরমানু বিক্রিয়ায় উবে যাচ্ছে গন্ধ
করি নাকো পরোয়া সৈনিক বৃত্তি
মৃত্তিকার চুম্বনে হয় হোক বন্ধ ।


অপরাধ শিকারীর, শিকার অনুতপ্ত
রক্তবীজের ঝাড় কুরুকুল বংশ
কার যুদ্ধ ? সীমা কার ? মাটি অভিশপ্ত
কার ভুল প্রশ্নে দুপক্ষই ধ্বংস ?


হিমবাহ সত্য,  ত্রেতা গলে সিন্ধু
যুগান্তর ভাঙ্গছে,  দুপাড়েই গঙ্গা
প্রবাহ তো মানুষের মুসলিম, হিন্দু

ওপারে সবুজ চাঁদ এপারে ত্রিরঙ্গা ।

১৬ জুন , ১৯৯৫
সতওয়ারী, জম্মু

Sunday, December 6, 2009

সিপাহী বিদ্রোহ



সিপাহী বিদ্রোহ


দিনকাল বড় গোলমেলে, গোলে গেল গজরাজ
বাতাস ছিদ্র করে ত্রিশুল, আকাশ ছাড়িয়ে আকাশ
রামধনু ছাড়িয়ে অগ্নি আর
যাবি কতদুর ?
মসজিদ পর্যন্ত ?
আর্টিলারি ফায়ারের কালো কালো ধোঁয়ায় মিশিয়ে সালফার-ডাই-অক্সাইড,
হাওয়া খায় পদকর্তা রামায়ণ গানে
ধূম্রকুন্ডলী মোচড় মেরে মেরে
জ্বালামুখে উগরে দেয় লাভা ।

ব্যাটারা খেয়েছিস নুন , গাবিনে গান ?
দেখছ ঘুঘু, দেখ নি ফাঁদ ?
গাঃ , গান গা।
হাওয়া খায় পদকর্তা রামায়ণ গানে

কার্গিল , ড্রাস, টুরটুকের প্রান্তরে,
বরফের চাদর বিছিয়ে টানটান শুয়ে 
পাছা উলটে গান গায় শানবাঁধা রানওয়ে ।

বাঁশের খোঁয়াড়ে বন্দী, বন্দে মাতরম
রাজপথে গান গায় হাতুড়ি ও কাস্তে ।

যারা পাপ করে নাই, ও হে পালের গোদা,
আবার বছর কুড়ি পরে 
যদি দেখা হয় তোমার আমার
মাইরি বলছি,
ঝলসে উঠবে বেয়নট

ওহে আডজুট্যান্ট, কমান্ডিং অফিসার ,
দোষ দিওনা আমায় নায়েক হাবিলদার

ফাটিয়ে দেব শক্তিশেল

গোলায় ফুরিয়ে এলে বারুদ,
বুকে বইছে একগঙ্গা রক্ত
ভরে নেব কামানের ব্যারেল

কিসের কোর্ট, কিসের ট্রায়াল
চার্জশীটের পাতায় পাতায় লিখব ইতিহাসের নতুন কবিতা

সিপাহী বিদ্রোহ।

১৯ মার্চ , ১৯৯৮
২৩ উইয়িং
সতওয়ারী, জম্মু

মান ডে প্যারেড



মান ডে প্যারেড 
বায়ে মুড় ! তে চল ! অ্যাবাউট টার্ন এর মত ই
যখন কমান্ড হল - ডিটেল লোড...
এফ. ও. ডি. তে আচমকাই হোঁচট !

ট্যাক্সি ট্রাকে প্যারেড করতে করতে ভুলেই গেছিলাম যে
পৃথিবীর ভোরের বাতাসের সাথে
আমার প্রেম হয়ে গেছিল ।

বায়ে ঘুম ! ডাইনে দেখ্ !
স্যালুট করে ফিরে যায় নির্বাক অতীত
কোমরে বেল্ট , সার্ভিস ক্যাপ অন
লেফট রাইট লেফট রাইট
তে চলেসময় ।

ওরা, আমার বাপ দাদারা ,
হাতে তলোয়ার, বল্গা, জিনের উপর ঘোড়ায় সওয়ার
যারা গোল চক্করের স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে এই শীতে
আমাদের প্যারেড দেখে পলক ঝাপটায়
চুপিসাড়ে করে নেয় কদম বদল ।

ওদের ইউনিটে,
আমাদের প্যারেড প্রতি সোমবার...
ওদের বুটের তালে তালে মিলিয়ে যাই পা...
ওদের কমান্ডে, কদম কদম বাড়িয়ে যাই

'বায়ে মুড়', 'তে চল', 'অ্যাবাউট টার্ন' এর মত ই
যখন ওদের কমান্ড হবে

'ডিটেল ফায়ার' ...

প্যারেড গ্রাউন্ডকে পিছে ফেলে 
মার্চে মার্চে অজান্তেই এভাবে একদিন
পার হয়ে যাব এল. এ. সি.

হয়ত...
আমিও একদিন


পাথর হয়ে যাব শহীদ মিনারে। 


৩ জানুয়ারী  ১৯৯৯
সি পি আর ইউ,  পালাম, নতুন দিল্লি

প্রেম ? সে এক স্বপ্ন ।


প্রেম ? সে এক স্বপ্ন

ভয় হয়, যদি ফিরিয়ে নাও ঠোঁট !
আমার মুখে তো টোটা ছেঁড়ার বারুদ বারুদ গন্ধ
ভয় হয়, যদি হাত থেকে সরিয়ে নাও হাত !
আমার হাত তো কর্কশ ও কঠিন,
বন্দুকের বাটে বাটে, কঠিন ঘর্ষণে
কড়া পড়ে পড়ে শক্ত।

প্রেম অন্যভাবেও করা যায় - প্লেটোনিক লাভ
বুকের উপর এক বিঘত জমি,
ফসল ফলান যায় বীরুৎ উদ্ভিদে ...
টি আর ইউ এর রাডারের স্কোপে তবু
অগনিত ক্লাটারের মাঝে তোমার চোখ , মুখ, শরীর ভেসে উঠলে
ফ্র্যাংক্লি স্পিকিং, মাংসের লোভ হয় !
ভয় হয় যদি ফিরিয়ে নাও চোখ
আমার চোখে তো অ্যজিমাথ , রেঞ্জ, বিয়ারিং
এয়ারক্রাফটের ইকো
আননোন হোস্টাইল ট্রাক  ।

এমনি করেই রাত ভোর হয়,
এমনি করেই রাত পক্ষ মাস
এমনি করেই কালো রাত্রির মাস পেরিয়ে
বছর, দশক ।

মানছি, এ জীবনটা মাটি,
এ দেশের প্রতিটা বিন্দু ধুলিকণা আমার মা,
তা বলে আমার শরীর ? আমার যৌনতা ?
আমি তার কেউ না ?

সমস্ত দিনের শেষে সন্ধ্যাতারা উঁকি মারে
গার্ড পোস্টের মাথার উপর
মদিরার গন্ধে মাতাল হয় পুবালী হাওয়া
আদিম তৃষারা হানা দেয় শুষ্ক ঠোঁটে
কিংবা রাত্রি গভীর হলে
শীতল বালিয়াড়ির আবছায়ায় তপ্ত হয় বুক -- সমস্ত রক্ত
সমস্ত শক্তি দুমড়ে মুচড়ে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে
তোমাকে খুব কাছে টেনে নিতে ইচ্ছে হয়,
ভালোবাসতে ইচ্ছে হয়
ভয় হয়, যদি ফিরিয়ে নাও বুক !
আমার বুকে তো দগদগে
বুলেটের নীল ঘা।

ভয় হয়, যদি ফিরিয়ে নাও মুখ !
আমার মুখে তো বারুদ বারুদ গন্ধ...

১২ জুলাই ২০০৪
জয়সালমীর , রাজস্থান

ঘরে ফেরা – ৯৮


ঘরে ফেরা – ৯৮

ছুটি ছুটি করে হঠাৎ ছুটি হয়ে গেল।


এমন ভাবেই কত বছর দেওয়াল পিছনে ফেলে
দেরি হলেও অবশেষে সত্যিই ঘরে ফেরা
সাঁঝের আকাশ লাগলে আঁধার, প্রদীপ রেখ জ্বেলে।


হারায় নি কিছুই, মাগো,
ছেলে তোমার যেমন ছিল তেমন আছে ঠিক
যেমন ছিল নাক, কপাল ছিল বিরাট,
বলত পাড়ার সবাই ,
ছেলে রাজ-পুত্তর বটে।


কালের ঘোড়ার লাগাম তাই আজ রাষ্ট্র-রাজের হাতে
জ্যোৎস্না-ভেজা বরফ পথে চলছে জীবন-রথ
নীহারিকার কালো হিমে আলো হব বলে
বিশ্বাসী বুক পায়ে দলে সেই হারালাম পথ।


চাকরি হল আমার,
প্রতিদিনের ভোরের বাতাস বিক্রি হল আমার !


অবিশ্রান্ত লেফট রাইট লেফট রাইট,
কদম কদম বাঢ়ায়ে যা...


( জাড্যকঠিন শরীর আমার
সরলরেখায়
নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র মেনে
চিরন্তন একই গতিবেগে গড়িয়ে চলে )


আমি, গ্রহ হতে চাইনি মা
সূর্য রঙে রাঙা হয়ে নিত্য গতিপথে
আবহমান কালের চাকায়
ঘুরতে আমি চাইনি মা।



(ওরা মন্ত্রপুতঃ যন্ত্রনরের দল
বন্ডে চাপা নথির নিচে ইঁদুর মারার কল)


বেলা বুঝি গেল,
আমার সন্ধ্যা হয়ে এল, মা !
সারাদিবস যুদ্ধ শেষেও ছুটি দিল না।

তবে
রাজপুত্র হতে হবে যে !


বীরের ধর্ম বীর্য !
মার কোল থেকে লাফ দিয়ে উঠে ছিঁড়তে হবে যে সূর্য !
পিতার হাতে দিতে যে হবে তুলে
বিজয়ের পথে কুড়িয়ে নেওয়া সোনার ঝাঁপি খুলে ।


( অস্ফুট শব্দে আচমকাই কেঁপে উঠল পৃথিবী
লালাশূন্য বন্ধ মুখে অসংখ্য শব্দ ফেনা হয়ে বেরিয়ে আসতে থাকে
জাতীয় পতাকা বুকে গেঁথে তারপর হঠাৎই স্তব্ধ হয়ে গেল )


নিঃশ্বাসে আজ ভরে নিয়েছি তেজঃস্ক্রিয় বিকিরণ
মগজের ঘিলুতে এটাক সফটওয়ার
শিরায় শিরায় এভিয়েশন টারবাইন ফুয়েল...


আকাশ পথে তাকাও মা, আমি আসছি...


যেন কত বছর হল
ছুটি ছুটি করে হঠাৎ ছুটি হয়ে গেল।




১৫ জানুয়ারী ১৯৯৯
নতুন দিল্লি

গ্যারেজে সাইকেলদের সাথে এক সন্ধ্যা


গ্যারেজে সাইকেলদের সাথে এক সন্ধ্যা


গ্রাউন্ডেড ক্যানবেরা কে সালামী সাজে স্যালুট করে
ঠ্যাঙের পরে ঠ্যাং তুলে
দেয়ালের গায়ে গা মিশিয়ে
দাঁড়িয়ে আছে
ঐতিহাসিক পালাম সিনেমার সাইকেল গ্যারেজ।
আনাগোনা প্রতিদিন এক কন্টিজেন্ট তরুন এয়ারম্যানের
সাইকেলের বিশ্রামাগার, যেন এক আড্ডা, মজলিশ
বি এস এ - এস এল আর, হিরো , অ্যাভোন, হারকিউলেস
রিমের ছড়ে যাওয়া ঘায়ে
ছেটানো মোবিল,
রানওয়ের এফ ও ডি তে হোঁচট খেয়ে ছিঁড়ে যাওয়া
ফাটা টায়ার, ঋজু হ্যান্ডেল ।
হারকিউলেস তাকিয়ে সহযোদ্ধা অ্যাভোনের চোখে

"এ শীতের শেষে সত্যিই কি ছুটি পাবো বসন্ত-পরবে ?
নাকি বরষার কাদা-জলে শেষ হবে আমাদের জমানো ছুটি ?"

ঢং ঢং ঢং ঢং শেষ হল সিনেমা ,  যুদ্ধ শেষ হল ।
ক্ষতবিক্ষত পুড়ে যাওয়া চামড়ার সিটে
এখনও কিশোর ছোঁয়া লেগে শিহরণ জাগে,
নাইট শোর গুটিকয় ব্যাচেলর ফৌজির চোখে
প্রতিদিনের মেনুতে ‘এ’ মার্কা ছবি ।

ভুড়িওয়ালা ওয়ারেন্ট অফিসারের সাইকেল
বসে গেছে যে সিট, প্যাডেলে পড়েছে বহু দিনের হতাশার চাপ,
সতীর্থ হিরো রেঞ্জারের চোখে
দুখীআত্মা এটলাস খোঁজে
সোনা রোদ সহমর্মিতা ।

“গুরু... যা শট দেখলাম
পিতলের গুলির মত মসৃন শরীর”

শ্বেতকায় অভিনেত্রীর শরীরের ভাঁজে
যেন লেখা আছে নদীর চঞ্চলা
স্বপ্নমাখা শারীরিক প্রেম ।


“আটেনশন!”

ভারি হ্যান্ডেল, স্টীল বেল , গোল্ডেন কালার ফায়ার ফক্স
চোদ্দ পেগ গিলে গুরুগম্ভীর
গলা চড়িয়ে সর্দার এম ডব্লিউ ও-র অকস্মাৎ কম্যান্ড

জামা, জুতো, টুপি, বেল্ট, নেম প্লেট গুছিয়ে
সারি সারি সাবধানে
ফাইল ও রাংকে দাঁড়িয়ে গেল
হিরো , অ্যাভোন, হারকিউলেস, এটলাস, বি এস এ, ফায়ার ফক্স ..

“কন্টিজেন!
ওই শ্বেতকায় নায়িকার যা আছে,
তা আছে আমারও প্রেমিকার ।
ঐ কোমর, ঐ নিতম্ব, নাভির নীচে বিষাক্ত নদি ”

জ্বলজ্বলে চোখে সবার শরীরী  ভাষা,  দেশপ্রেমী রোগ উসকায়

"আমার প্রেমিকারও আছে ঐ বক্ষ, ঐ আঁখি, উতপ্ত ওষ্ঠ
সুতরাং
বাঁয়ে দেখ, তে চল..."

ঘাড় নেড়ে স্যালুট করে তিন র‍্যাংকের ফ্লাইট
আধা ডাইনে মুড়ে
ছত্রভঙ্গ হবার আগে
সমঃস্বরে একযোগে সাইকেলগুলি চেঁচিয়ে বলল
এই কথাগুলি

“তবে কেন এই রক্তক্ষরণ
কেন এই বুট পায়ে প্যারেড, হাতে মেশিন গান ?
কেন এই রণাঙ্গণ , বিমান উড্ডয়ন ?
কেন এই বসে থাকা যুদ্ধের অপেক্ষায় ?
চলো চলো চলো
আপনা আপনা কাম পর সংস্থান ”

মুহূর্তে রাত্রির বুক বেয়ে নেমে আসে অশরীরী নীরবতা
গলা বুজে আসে ফিসফিসানি আর্দ্র বাতাসের
ছত্রভঙ্গ ভিড়ের দিকে তাকিয়ে থাকে বাকরুদ্ধ অন্ধকার।

ঠ্যাঙের পরে ঠ্যাং তুলে
দেয়ালের গায়ে গা মিশিয়ে
তখনোও 'সালামী সাজে'
নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকে
ঐতিহাসিক পালাম সিনেমার সাইকেল গ্যারেজ।


১০ আগস্ট ১৯৯৮
এয়ারম্যান বিলেট

নং ৩ উইয়িং, পালাম



১০-০২-১৯৯৯

--------------------------------------------
পুরানো লেখা, অপ্রকাশিত...কি জানি যুদ্ধের কবিতার ভক্ত আজ ও আছে কিনা ? দেখি কি মতামত তাদের ?

কিছু টার্ম
--------
ওয়ারেন্ট অফিসার - প্রাথমিক কমান্ডার
বায়ে দেখ - মার্চ করতে করতে বাঁ দিকে তাকানো
তে চল - মার্চ শুরু করার কমান্ড
আপনা আপনা কাম পর সংস্থান - ছত্রভংগ হবার কমান্ড
সালামী সাজ - সর্বোত্তম স্যালুট
আধা ডাইনে মুড়ে - বিশেষ প্যারেড ভঙ্গি
রাংক - আড়াআড়ি লাইন
ফাইল - পাশাপাশি লাইন
এম ডব্লিউ ও- ওয়ারেন্ট অফিসার এর থেকে এক র‍্যাংক বড় অফিসার
এয়ারম্যান - বিমান বাহিনীর সৈন্য