Wednesday, November 15, 2023

স্যালুট

স্যালুট

--পীযূষকান্তি বিশ্বাস

 

সালামী সাস্ত্রে স্যালুট করলে 

রাইফেলও দেখতে পায় এক অন্য আকাশ

চোখ বুলিয়ে দ্যাখো কারাকোরাম

তার গায়ে শরীর এলিয়ে দিয়ে ঝুঁকে থাকা

নত মস্তক পামীর মালভূমি

বুকভরে টেনে নাও তৃপ্তির নিঃশ্বাস

 

আমি সেইভাবে পর্বত নই

শরীরজুড়ে তবুও এক অদ্ভুত শীতলতা

একটা ধাতব চট্টান অনুভব করছি ...  

চোখদুটো কাঁপছে ঠিক মানুষের মতো

পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি পৃথিবীর শীতলতম দিন 

শূন্য প্রান্তরে আমি ছাড়া কেউ নেই...

 

কোথাও হটাৎ যেন কুচকাওয়াজ

ওখানে কিছু স্নোবুট 

মৃত সৈনিকের পায়ের শব্দ

রক্তরাঙা পতাকা উড়িয়ে   

মার্চ করে হেঁটে আসছে র‍্যাংক ও ফাইল  

আচমকা লেফট টার্ন নিয়ে তারা

আমার সামনে এসে দাঁড়ালো ! 

 

'সালামী সাস্ত্র' - তারা স্যালুট দিলো  !  

আমি যেন আকাশ দেখতে পেলাম

দেখতে পাচ্ছি নতমস্তক পামীর মালভূমি

অনুভব করছি সেই তৃপ্তমুহূর্ত

বুকে একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে

আমার মুখের থেকে যেন ছিটকে বেরোলো বুলেট

আমি নিজেই তিনটি গুলি ছুড়ে 

কোন সহীদকে যেন স্যালুট জানালাম

 

যুদ্ধ কবেই শেষ হয়ে গেছে  

বিজয় পতাকার নীচে ঘুমিয়েছে শীতল উপত্যকা 

রাইফেল হাতে নিয়ে সৈনিকসজ্জায় দাঁড়িয়ে 

আমি তার তুষার রাজ্যের শেষ প্রহরী

 

 

 

Salute

--Pijush Biswas

 

When you salute in salami shastra 

The rifle can see the other sky.

Look at Karakoram;

With leaning mass of body

The great Pamir Plateau lying beside.

As a sigh of gratification, 

You can indeed take a full breath !

 

Surely, I'm not a mountain;

Still a strange chill all over the my body

I feel some metallic rock in me...  

My eyes are shivering as human eyes

I can clearly sense the coldest day of the earth 

There's no one in the void valley but me...

 

Let's hear the parade somewhere

Some snowboots sound there 

The left right left of a few dead soldiers.

Carrying the blood-stained flag  

They had been marching on rank and file.  

With a sharp synchronized left turn 

And they halted in front of me.

 

Salami Shastra - I looked at their salute !

At that moment I could notice there was a sky 

I could see the flattened Pamir Plateau;

Felt my elated position in the vicinity.

Having taken a deep breath

The bullets blasted out of my mouth !

As they sounded like three gun-shots, 

I indeed saluted a martyr.

 

Indeed, the war was over a long time ago, 

Chilled valley has been sleeping under the hoisted flag.

With a rifle in hand with uniform on 

I am the last guard of it's frozen kingdom.

 

 

Brief Biodata:

 

Pijush Kanti Biswas is a Bengali poet from Delhi. Born 1975 in Hat Bahirgachi, District Nadia, West Bengal, India. Father Jnanendra Nath Biswas Bhavgan singer and lyricist. He joined the Indian Air Force at the age of 17. He wrote poems on army life and those are published various Bengali little magazine published from New Delhi and Kolkata. Some poems of that time are available in various blogs and web magazines. In 1998, started living in Palam and Mahavir Enclave area in New Delhi. Here he started to contribute to Bengali literature through the little magazine 'Kathanjali' published from Delhi. He published his book 'Badha Noi Rokto' in 2008 in Mahavir Enclave, New Delhi. In 2014, his second book of poetry 'Ghumghar' was published at the Delhi Book Fair, publisher was Delhi Haaters. In 2016, his third book of poetry was titled as 'Akash Chumban' and published by Abhijan Publishers from Kolkata. Apart from writing poetry, Pijush Kanti Biswas writes free prose, book reviews, stories on various blogs in Bengali literature. He has managed and oversighted two bengali little magazines called 'Kathanjali' and 'Pratibha Pathikrit'. As an editor, he has edited 'Shunyakal' web magazine. With support from poets of Delhi,in 2017 he started editing the magazine 'Dehlij' to promote bengali literature of Delhi NCR. 

 

 

 

 

পীযূষ কান্তি বিশ্বাস দিল্লির একজন বাঙালি কবি। জন্ম ১৯৭৫ সালে হাট বাহিরগাছি, জেলা নদীয়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতে। পিতা জ্ঞানেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ভাবগান গায়ক ও গীতিকার। তিনি ১৭ বছর বয়সে ভারতীয় বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি সেনাবাহিনীর জীবনের উপর কবিতা লিখেছেন এবং সেগুলি নতুন দিল্লি এবং কলকাতা থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন বাংলা লিটল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে।  ১৯৯৮ সালে পালাম ও মহাবীর এনক্লেভ এলাকায় বসবাস শুরু করেন। এখানে তিনি দিল্লি থেকে প্রকাশিত লিটল ম্যাগাজিন 'কথাঞ্জলি'র মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে অবদান রাখতে শুরু করেন। তিনি ২০০৮ সালে মহাবীর এনক্লেভ, নয়াদিল্লিতে তাঁর 'বাধা নয় রক্ত' বইটি প্রকাশ করেন । ২০১৪ সালে, দিল্লি বইমেলায় তার দ্বিতীয় কবিতার বই 'ঘুমঘর' প্রকাশিত হয়, প্রকাশক দিল্লি হাটার্স । ২০১৬ সালে, তার তৃতীয় কবিতার বইটির নাম ছিল 'আকাশ চুম্বন' এবং কলকাতা থেকে অভিজন পাবলিশার্স প্রকাশিত হয়েছিল। পীযূষ কান্তি বিশ্বাস কবিতা লেখার পাশাপাশি বাংলা সাহিত্যে ব্যক্তিগত গদ্য, বইয়ের রিভিউ, বিভিন্ন ব্লগে গল্প লেখেন। তিনি দিল্লি থেকে 'কথাঞ্জলি' এবং 'প্রতিভা পথিকৃৎ' নামে দুটি বাংলা লিটল ম্যাগাজিন পরিচালনা ও তদারকি করেছেন। সম্পাদক হিসেবে তিনি সম্পাদনা করেছেন 'শূন্যকাল' ওয়েব ম্যাগাজিন। দিল্লির কবিদের সহায়তায় তিনি দিল্লি এনসিআর-এর বাংলা সাহিত্যের প্রচারের জন্য ২০১৭ সালে 'দেহলিজ'পত্রিকার প্রতিষ্ঠা সম্পাদনা শুরু করেন

 

 

Friday, March 25, 2022

সংক্ষিপ্ত বায়োডাটা

 পীযূষকান্তি বিশ্বাস । জন্ম ১৯৭৫ হাট বহিরগাছি, জেলা নদীয়া, পশ্চিমবঙ্গ , ভারত । পিতা জ্ঞানেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ভাবগান গায়ক ।  মাতা, করুণাময়ী বিশ্বাস ।  কবি পীযূষকান্তি বিশ্বাস স্কুল জীবনে লেখালেখি করলেও সেই সমস্ত কাজ আজ সংগ্রহে নেই । ১৯৯২ সালে তিনি রাণাঘাট কলেজ থেকে ১২ ক্লাস পাশ করার পর ভারতীয় বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন । সেই সময়কার কিছু কবিতা বিভিন্ন ব্লগে পাওয়া যায় । ১৯৯৮ সালে তিনি দিল্লিতে পোস্টিং নিয়ে আসেন . এখান থেকে প্রকাশিত 'কথাঞ্জলী' পত্রিকার মাধ্যমে তার পরবর্তী জীবনের কবিতা যাপন শুরু হয় । ২০১৪ এ দিল্লি হাটার্সের সম্পাদক দিলীপ ফৌজদারের সহায়তায় তার প্রথম কবিতার বই  'ঘুমঘর' দিল্লির বইমেলায় প্রকাশিত হয় । ২০১৬ তে তার  দ্বিতীয় কবিতা গ্রন্থটি 'আকাশ চুম্বন' নামে কলকাতার অভিযান পাবলিশার্স  প্রকাশ করেন । কবিতা লেখা ছাড়া, পীযূষকান্তি বিশ্বাস বাংলা সাহিত্য পরিসরে, বিভিন্ন ব্লগে ও সোস্যাল মিডিয়ায় কবিতা ও সাহিত্য বিষয়ক প্রবন্ধ লিখে থাকেন ।  এ ছাড়া, সম্পাদক হিসাবে তিনি সম্পাদনা করেছেন 'শূন্যকাল' ওয়েব ম্যাগাজিন । বর্তমানে দেহলিজের সম্পাদনা ও পরিচালনার দায়িত্বে আছে কবি পীযূষকান্তি বিশ্বাস ।


Tuesday, August 4, 2015

বায়োডাটা -২


কবি পরিচিতি

পীযূষকান্তি বিশ্বাস দিল্লির বাঙালী কবি । জন্ম ১৯৭৫, নদীয়া, পশ্চিমবঙ্গ , ভারত । স্কুল জীবনে লেখালেখি করলেও সেই কাজ সংগ্রহ করা নেই ।স্কুল শেষ হতে না হতেই ভারতীয় বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন । সেই সময়কার কিছু কবিতা পাওয়া যায় যেগুলো তিনি জম্মু ও কাশ্মীরে পোস্টিং
থাকাকালীন লিখেছিলেন । ১৯৯৮ সালে তিনি দিল্লিতে পোস্টিং নিয়ে আসেন এবং কার্গিল যুদ্ধে তিনি বিমানবাহিনীতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন । আর্মি জীবনের কিছু অলেখা কথা তার কবিতায় বিশেষ ভাবে স্থান পায় । তখন দিল্লি থেকে প্রকাশিত 'কথাঞ্জলী' প্রত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন । ২০০৫ সালে কদম বদল । বিমানবাহিনী ছেড়ে দিয়ে সফটওয়ার ইঞ্জিনীয়ার হিসাবে মাল্টিন্যাশনালে যোগদান করেন । নিয়মিত লেখালেখি ২০১০ এর পরেই ।  ২০১৪ এ তার প্রথম কবিতার বই  'ঘুমঘর'  দিল্লির বইমেলায় দূরত্ব পাব্লিকেশ থেকে প্রকাশিত হয় । বইটি কবিবন্ধুদের মধ্যে বিশেষ ভাবে প্রশংসিত হয় । তার দ্বিতীয় বইটি 'আকাশ চুম্বন' ২০১৫ কলকাতা বইমেলায় অভিযান পাব্লিশার্স থেকে বের হয় । এ ছাড়া 'বাঁধা নয় রক্ত' একটি বই 'ই-বুক' হিসাবে পাওয়া যায় । বর্তমানে দিল্লি থেকে প্রকাশিত দিগঙ্গন পত্রিকার সম্পাদক মন্ডলীতে আছেন ।



পীযূষকান্তি বিশ্বাস দিল্লির বাঙালী কবি ।  । জন্ম ১৯৭৫ হাট বহিরগাছি, জেলা নদীয়া, পশ্চিমবঙ্গ , ভারত । পিতা জ্ঞানেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ভাবগান গায়ক ও গীতিকার । মাতার নাম  করুণাময়ী বিশ্বাস  ।  কবি পীযূষকান্তি বিশ্বাস স্কুল জীবনে লেখালেখি শুরু করেন । মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি ভারতীয় বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন । সেই সময়কার কিছু কবিতা বিভিন্ন ব্লগে পাওয়া যায় । ১৯৯৮ সালে তিনি দিল্লিতে পোস্টিং নিয়ে আসেন এবং বসবাস শুরু করেন পালম ও মহাবীর এনক্লেভ এলাকায় ।  এখানেই দিল্লি থেকে প্রকাশিত 'কথাঞ্জলী' পত্রিকার মাধ্যমে তার কবিতা যাপন শুরু হয় । ২০০৫ সালে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে যোগদান করেন । ২০১৪ এ দিল্লি হাটার্সের সম্পাদক দিলীপ ফৌজদারের সহায়তায় তার প্রথম কবিতার বই  'ঘুমঘর'  দিল্লির বইমেলায় প্রকাশিত হয় । ২০১৬ তে তার  দ্বিতীয় কবিতা গ্রন্থটি 'আকাশ চুম্বন' নামে কলকাতার অভিযান পাবলিশার্স  থেকে প্রকাশিত হয় । কবিতা লেখা ছাড়া, পীযূষকান্তি বিশ্বাস বাংলা সাহিত্য পরিসরে, বিভিন্ন ব্লগে ও সোস্যাল মিডিয়ায় মুক্ত গদ্য, বুক রিভিউ, গল্প লিখে থাকেন ।  যুক্ত ছিলেন 'কথাঞ্জলী' ও 'প্রতিভা পথিকৃৎ' নামক দুটি পত্রিকার সঙ্গে । সম্পাদক হিসাবে তিনি সম্পাদনা করেছেন 'শূন্যকাল' ওয়েব ম্যাগাজিনে । দিল্লির বাঙালি পাঠক ও কবিদের মাঝে  ২০১৭তে রবীন্দ্র-ভবনের চত্বরে দিল্লির বাংলা সাহিত্যের চর্চা ও প্রসারের উদ্দেশ্যে  'দেহলিজ' পত্রিকাটি প্রকাশ করেন । দেহলিজ একটি ওয়েব বেসড পত্রিকা যা দিল্লির সীমারেখা পার করে সুদূর বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, ইউরোপ, আমেরিকা পৌঁছে যাবার আকাঙ্ক্ষায় নিবেদিত । বর্তমানে দেহলিজের সম্পাদনা ও পরিচালনার দায়িত্বে আছে কবি পীযূষকান্তি বিশ্বাস ।


দেহলিজ,দিল্লি থেকে প্রকাশিত বাংলা পত্রিকা ।  প্রবাসী বাঙালী ও দিল্লি স্থিত সেকেন্ড ও থার্ড জেনারেশনের দ্বারা লিখিত বাংলা সাহিত্যের প্রচারে ও প্রসারে ২০১৭ খ্রীস্টাব্দে দেহলিজের উপস্থাপন হয় রবীন্দ্রভবনে । দিল্লির পক্ষে দেহলিজ একটি স্ট্রং পদক্ষেপ । দিল্লির হাতে গোনা লিটল ম্যাগাজিন, ওয়েবজিন, তাদের দুএকটি ম্যাগাজিন ছাড়া প্রায় পত্রিকাগুলি অনিয়মিত এবং তা চরম ভাবেই স্বাভাবিক । এটাই দিল্লির বাংলা সাহিত্যের বৈশিষ্ট্য । দিল্লির কি নিজস্ব সাহিত্য চরিত্র থাকতে পারে? দিল্লি নিজেই যখন এক ঐতিহ্য, ২২ লক্ষ বাঙ্গালীর বাস । কেন নয়? দিল্লির বাংলা সাহিত্যের অনলাইন উপস্থাপন,লেখনীর সংরক্ষন ও বাংলা চর্চা জারি রাখা অপরিহার্য। দেহলিজকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অনলাইন বাংলা সাহিত্য চর্চা । 

Dehlij is a Bengali web magazine rom Delhi, Delhi. This is a printed version of selected articles published in Dehlij.  Dehlij was presented at Rabindra Bhaban in 2017 to promote Bengali literature written by expatriate Bengalis and Delhi-based second and third generation. Dehlij is a strong move for Delhi. Delhi's handful of little magazines, webzines, except for one or two of them almost all magazines  are irregular and which is expected. This is the characteristic of Bengali literature of Delhi. Can Delhi have its own literary character? While Delhi itself is a tradition and a home to 22 lakh Bengalis. Why not? Online presentation of Delhi's Bengali literature is important and preservation of writings and continuation of Bengali practice is essential. With all these Online Bengali literary practice has been developed around Dehlij.

  

ডায়াস্পোরা নিয়ে কথা হয়, দিল্লির বাংলা শব্দে হরিয়ানভি ঠাট্‌ , বরিশালের গাংচিল আর রংপুরের লালমাটির মত স্পষ্ট । তো জাহির হে, বাংলাকে শুদ্ধ বাংলা বলতে যত প্রয়াসই হোক, আমরা আরাবল্লির মাটির গন্ধকে কি করে ভুলে যাই ? । বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর । একবার কুতুব মিনারের গায়ে হাত দিয়ে দেখুন, একবার যমুনায় পা ডুবিয়ে দেখুন, এক মধ্য রাতে ইন্ডিয়া গেট, এক দুপুরে খুনি দরবাজা , এক জানুয়ারিতে লোধী গার্ডেন, এক ফেব্রুয়ারিতে হুমায়ুন টমে বোঝা যায় ভারতবর্ষের কৈশোর, ইতিহাসের যৌবন, আর পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের অবয়ব রাইসিনা হিলস । দেহলিজের জন্ম নিয়ে অনেক উন্মাদনা । দিল্লির পাথরবুকের সজীবতার ছোঁয়া । সুদূর ওমানবীয় ধূলিঝড় উড়িয়ে নিয়ে গেলো পল্যুশন, রাজধানী একরকম আর দিলবাজী অন্যরকম, দিল্লির শাহী জলবায়ুতে কলার পুন প্রবেশের মাঝদিয়ে এই ডিজিটাল দৌড়ের সূচনা । তো জাহির, হে এখানে পলিটিক্সের পাশ ঠেলে দাঁড়িয়ে উঠেছে কবিয়ালের দেওয়াল । রাখা হলো নির্বাচিত দেহলিজ প্রিন্ট ভার্সন । অনলাইন দেহলিজের একান্ত পরিপূরক । আমার আপনার দেহলিজ । নির্বাচিত দেহলিজ । দিল্লি থেকে প্রকাশিত বাংলা পত্রিকা
 ।


 
পীযূষকান্তি বিশ্বাস দিল্লির বাঙালী কবি ।  । জন্ম ১৯৭৫ হাট বহিরগাছি, জেলা নদীয়া, পশ্চিমবঙ্গ , ভারত । পিতা জ্ঞানেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ভাবগান গায়ক ও গীতিকার । মাতার নাম  করুণাময়ী বিশ্বাস  ।  কবি পীযূষকান্তি বিশ্বাস স্কুল জীবনে লেখালেখি শুরু করেন । মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি ভারতীয় বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন । সেই সময়কার কিছু কবিতা বিভিন্ন ব্লগে ও পত্রপত্রিকায় পাওয়া যায় । ১৯৯৮ সালে তিনি দিল্লিতে পোস্টিং নিয়ে আসেন এবং বসবাস শুরু করেন পালম ও মহাবীর এনক্লেভ এলাকায় ।  এখানেই দিল্লি থেকে প্রকাশিত 'কথাঞ্জলী' পত্রিকার মাধ্যমে তার কবিতা যাপন শুরু হয় । ২০০৫ সালে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে যোগদান করেন । ২০১৪ এ দিল্লি হাটার্সের সম্পাদক দিলীপ ফৌজদারের সহায়তায় তার প্রথম কবিতার বই  'ঘুমঘর'  দিল্লির বইমেলায় প্রকাশিত হয় । ২০১৬ তে তার  দ্বিতীয় কবিতা গ্রন্থটি 'আকাশ চুম্বন' নামে কলকাতার অভিযান পাবলিশার্স  থেকে প্রকাশিত হয় । কবিতা লেখা ছাড়া, পীযূষকান্তি বিশ্বাস বাংলা সাহিত্য পরিসরে, বিভিন্ন ব্লগে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মুক্ত গদ্য, বুক রিভিউ, গল্প লিখে থাকেন ।দিল্লিতে বসের  পরিচালনা করেছেন 'কথাঞ্জলী' ও 'প্রতিভা পথিকৃৎ' নামক দুটি বাংলা লিটল ম্যাগাজিন । সম্পাদক হিসাবে তিনি সম্পাদনা করেছেন 'শূন্যকাল' ওয়েব ম্যাগাজিনে । দিল্লির বাঙালি পাঠক ও কবিদের মাঝে  ২০১৭তে রবীন্দ্র-ভবনের চত্বরে দিল্লির বাংলা সাহিত্যের চর্চা ও প্রসারের উদ্দেশ্যে  'দেহলিজ' পত্রিকাটি প্রকাশ করেন । দেহলিজ একটি ওয়েব বেসড পত্রিকা যা দিল্লির সীমারেখা পার করে সুদূর বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, ইউরোপ, আমেরিকা পৌঁছে যাবার আকাঙ্ক্ষায় নিবেদিত । বর্তমানে দেহলিজের সম্পাদনা ও পরিচালনার দায়িত্বে আছে কবি পীযূষকান্তি বিশ্বাস ।


PijushKanti Biswas is a Bengali poet from Delhi. . Born 1975 in Hat Bahirgachi, District Nadia, West Bengal, India. Father JnanendraNath Biswas Bhavgan singer and lyricist. Mother's name is Karunamayi Biswas. Poet PijushKanti Biswas started writing in his school life. He joined the Indian Air Force at the age of 17. Some poems of that time are available in various blogs and magazines. In 1998, he got posting in Delhi and started living in Palam and Mahavir enclave area. It was here that his poetry began to live through the little magazine 'Kathanjali' published from Delhi. He koined a multinational company as a software engineer in 2005. In 2014, his first book of poetry 'Ghumghar' was published at the Delhi Book Fair with the support of Dilip Faujder, editor of Delhi Hatters. In 2016, his second book of poetry titled 'Akash Chumban' was published by Abhijan Publishers, Kolkata. Apart from writing poetry, PijushKanti Biswas writes free prose, book reviews, stories on various blogs and social media in Bengali literature. He has managed and oversighted two magazines called 'Kathanjali' and 'Pratibha Pathikrit'. As an editor, he has edited 'Shunyakal' web magazine. Among the Bengali readers and poets of Delhi, in 2017, in the premises of Rabindra Bhawan, he published the magazine 'Dehlij' for the purpose of practicing and spreading the Bengali literature of Delhi. Dehlij is a web based magazine dedicated to reaching far beyond the boundaries of Delhi to Bangladesh, West Bengal, Europe, America. At present, poet PijushKanti Biswas is in charge of editing and managing Dehliz.










































 





biodata


কবি পরিচিতি

পীযূষকান্তি বিশ্বাস দিল্লির বাঙালী কবি । জন্ম ১৯৭৫, নদীয়া, পশ্চিমবঙ্গ , ভারত । স্কুল জীবনে লেখালেখি করলেও সেই কাজ সংগ্রহ করা নেই ।স্কুল শেষ হতে না হতেই ভারতীয় বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন । সেই সময়কার কিছু কবিতা পাওয়া যায় যেগুলো তিনি জম্মু ও কাশ্মীরে পোস্টিং
থাকাকালীন লিখেছিলেন । ১৯৯৮ সালে তিনি দিল্লিতে পোস্টিং নিয়ে আসেন এবং কার্গিল যুদ্ধে তিনি বিমানবাহিনীতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন । আর্মি জীবনের কিছু অলেখা কথা তার কবিতায় বিশেষ ভাবে স্থান পায় । তখন দিল্লি থেকে প্রকাশিত 'কথাঞ্জলী' প্রত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন । ২০০৫ সালে কদম বদল । বিমানবাহিনী ছেড়ে দিয়ে সফটওয়ার ইঞ্জিনীয়ার হিসাবে মাল্টিন্যাশনালে যোগদান করেন । নিয়মিত লেখালেখি ২০১০ এর পরেই ।  ২০১৪ এ তার প্রথম কবিতার বই  'ঘুমঘর'  দিল্লির বইমেলায় দূরত্ব পাব্লিকেশ থেকে প্রকাশিত হয় । বইটি কবিবন্ধুদের মধ্যে বিশেষ ভাবে প্রশংসিত হয় । তার দ্বিতীয় বইটি 'আকাশ চুম্বন' ২০১৫ কলকাতা বইমেলায় অভিযান পাব্লিশার্স থেকে বের হয় । এ ছাড়া 'বাঁধা নয় রক্ত' একটি বই 'ই-বুক' হিসাবে পাওয়া যায় । বর্তমানে দিল্লি থেকে প্রকাশিত দিগঙ্গন পত্রিকার সম্পাদক মন্ডলীতে আছেন ।




Wednesday, January 7, 2015

ভূমিকা

সকলে কবি নয়, কেউ কেউ কবি, কথাটি সর্বজনস্বীকৃত সত্য । পাঠকবন্ধুরা সকলেই তাঁদের উপলব্ধির ভিত্তিতে বিচার করেন কোন কবিতা গ্রহণযোগ্য আর কোনটি নয়! কোন কবিতাটি তাৎপর্য্যপূর্ণ কিংবা কোনটি ছন্দানুসারী; আবার কোনটি অর্থহীন কিছু কথার সমষ্টি মাত্র । আসলে বিশ্বব্রম্মান্ডের দেখা অদেখা সমস্ত বিষয়বস্তু কবির হৃদয়কে স্পর্শ করে ভাবনার আলোড়ন তুলতে পারে এবং নতুন কিছু সৃষ্টির জন্য উৎসাহিত করতে পারে ।
তাই বলা যায় কবির মনোজগৎ এক উন্মুক্ত বাতায়ন আর তাঁর মধুময় কলমের স্পর্শে পাঠকমহলে সৃষ্টি হয় এক স্বপ্নময় অনুভূতি । যে কবির পাঠকমনে যত বেশী ব্যাপ্তি  কালের বিচারে তার বিস্তারও তত বেশী । তাই আমরা নিয়ত পরিচিত হই নতুন নতুন লেখকবন্ধুদের সঙ্গে যারা তাঁদের স্বপ্ন কাজলে এঁকে দেন আমাদের হৃদ্দেশে নতুন এক সৌভিক অনুভূতি ।
তেমনই এক তরুন কবিকে আমরা পেয়েছি যিনি মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন । তিনি নিয়ে এসেছেন তাঁর সামরিক অভিজ্ঞতার ডালি এই কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে । গ্রন্থকার শ্রী পীযূষকান্তি বিশ্বাস এর জন্ম পশ্চিমবঙ্গের এক প্রত্যন্ত গ্রামে । পিতা স্বর্গত শ্রী জ্ঞানেন্দ্রনাথ বিশ্বাস অবসর সময়ে ভক্তিগীতি রচনা ও পরিবেশনা করতেন । আর অগ্রজ শ্রী পলাশকান্তি বিশ্বাস একজন সুপরিচিত কবি ও সাহিত্য বোদ্ধা । এই পারিবারিক পরিমন্ডল একদিকে আর অন্যদিকে সামরিক জীবনের অভিজ্ঞতা পীযূষকান্তিকে কবিতা রচনায় সতত উদ্দীপিত করেছে; সেই সঙ্গে বাংলার কাব্য ভান্ডারে যুক্ত করেছে বেশ কিছু যুদ্ধ ভিত্তিক কবিতা এবং সেই সব সংগ্রামী জীবনের বিবিধ কাহিনী ও নিত্তদিনের অভিজ্ঞতা ।
তাই তাঁর 'জীবাশ্ম' কবিতায় পাই এক সৈনিক জীবনের উপলব্ধিঃ "বেয়নটের ফলাকায় মাখানো অচেনা বিষ /ঘাড়ের পরে অহরহ বুলেটের নিঃশ্বাস /গ্রন্থিতে গ্রন্থিতে আর ডি এক্সের ধোঁয়া বাঁচিয়ে /বাঁচিয়ে রেখেছি এই প্রেম /পথ চেয়ে বসে আছে বিবাহ বাসর ।" সৈনিক জীবনের অর্পিত কর্তব্য বনাম হৃদয় উদ্বেলিত প্রেমের বাস্তব ছবি আমরা দেখতে পাই কবির অনেক কবিতার ছত্রে ছত্রে; যেমন "বিকানীরের বৈকালে বিশাল দিগন্তে ক্লান্ত নোন্তা ঘাম লু হাওয়া লুটে খায়/ তোমাকে আমার তখন মনে পড়ে অসীমা, অ্যাংকলেট বুটপায়ে নেমে পড়ি রাস্তায়..." ( বিকানীরের সূর্যাস্ত )। "মিগ টোয়েন্টি ওয়ান" কবিতায় কবির বিদ্রোহী মন তুলে ধরেছে এক চিন্তনীয় প্রশ্নঃ " আমি বড় হয়রান মৌসুমি , কিংকর্তব্যবিমুঢ় / কিসের যুদ্ধ এ ? / কাদের লড়াই / নিজেরই বুকে ক্ষত নিয়ে কৃত্রিম সীমানার বড়াই ?"

জীবনে অনেক সময়ে আমাদের পরিশ্রম অর্থহীন হয়ে পড়ে, যদিও পরিশ্রম এক নিত্যনৈমিত্তিক জীবনধর্ম । কর্মক্ষেত্রে বা সংসার জীবনে বিনা পরিশ্রমে ফল মেলে না, এ কথা জানা সত্বেও পরিশ্রমী জীবনকে বেছে নিই । কবিও নিয়েছেন, কিন্তু তবুও দেখি কখনো কখনো হতাশা তাঁর হৃদয়কে স্পর্শ করে গেছে , যখন দেখি তিনি


লিখেছেন , "গর্দনটা নিচে ঝুঁকিয়ে দেখলে মাটি দেখা যায় / যেখানে ঝরে পড়ছে প্রতিদিন / পরাজিত ঘাম " (ঘুমের দেশে) , এ এক অদ্ভুত বাস্তব অনুভূতির স্পর্শ ।
বিশ্বজুড়ে আমরা যে সংগ্রামের ছবি নিত্য দেখি তা এক মানব জীবনের বেদনাভরা আলাপন । দেশে দেশে মানুষে মানুষে সখ্যতার অভাব এবং ক্ষমতার আস্ফালন ও বৈরী মনোভাব পারিপার্শ্বিক আবহাওয়াকে বিষিয়ে তুলেছে। তার অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হলো জীবন ও সম্পদের অবক্ষয় । ফলতঃ দেশের ভিতরে বাইরে নানা কারণে নিয়ত দ্বন্দের সৃষ্টি । কবি শ্রী পীযূষকান্তি  পাঠক বন্ধুদের সামনে এক মুল্যবান প্রশ্ন তুলে ধরেছেন তাঁর "জলজ শ্যাওলা" কবিতায়..."ভু-ফোঁড়ে জনকের /প্রতিনিয়ত এই রকম শহীদ প্রসব / হা ঈশ্বর, / কে নিয়ে আসে এদের সংগ্রামী মৃত্যু ?..." এক চিরন্তন জিজ্ঞাসা যার উত্তর হয়ত মানুষের আজও অজানা তাই তা তিনি ঈশ্বরের কাছেই তুলে ধরেছেন ।
কবিতা নিয়ে বিশেষ পরীক্ষা - নিরীক্ষার শুরু রবীন্দ্র পর্বের শেষ দিক থেকে যখন কিছু নতুন কবি তাঁর অসাধারণ কবিত্ব প্রতিভার প্রতি অঙ্গুলিসংকেতের মাধ্যমে নিজেদের গুনবত্বা কে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে সচেষ্ট হইয়েছিলেন; এবং তা প্রথম মহাযুদ্ধের সময় থেকে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকাল পর্য্যন্ত খুবই প্রকট হয়ে উঠেছিল । ভিক্টোরিয় যুগের ইংরেজী কবি জিরার্ড ম্যানলে হপকিন্স সনাতন চিন্তাধারার অবসান ঘটিয়ে নিয়ে আসলেন আধুনিক ভাবধারা । তাঁকে অনুসরণ করে এগিয়ে এসেছিলেন মহিলা কবি এমি লাওয়েল এবং আরও অনেকে । ইংল্যান্ডে জন্ম নিলো 'ইমাজিস্ট' গ্রুপ । বাংলা সাহিত্যেও অনুরূপ চিত্রের প্রতিফলন দেখতে পাই এবং সে যুগের বহু নামী-দামী কবিকে আমরা পেয়েছি আধুনিক কবিতার শ্রষ্টা হিসাবে । তাঁরা  বাংলা কাব্য জগতে রবীন্দ্রধারাকে অগ্রাহ্য করে নতুনত্বের সন্ধানে ব্রতী হওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছিলো একথা যেমন সত্যি, তেমনি পাঠক পেয়েছিলো  নতুনত্বের আস্বাদন -  ছন্দে, বিষয়বস্তুতে, ভাষায় ও প্রকাশভঙ্গীতে । বর্তমান কাব্যগ্রন্থে শ্রী পীযূষকান্তি বিশ্বাস সেই নতুনত্বের ডালি আমাদের উপহার দিয়েছেন যা পাঠকমনে এক অভিনব ছাপ রেখে যাবে বলে বিশ্বাস করি ; বিশেষ করে সমগ্র গ্রন্থটি হয়ে উঠেছে সামরিক জীবনের এক বাস্তবানুভূতি ও তার মুল্যবান চিত্রকল্প ।
আনুমানিক ২০০২ সালে যখন শ্রী পীযূষকান্তি প্রথমবার আমার সঙ্গে আলাপ করতে এসেছিলেন । তখন তাঁর কয়েকটি কবিতার মাধ্যমে তাঁর কাব্য প্রতিভার পরিচয় আমি পেয়েছিলাম । প্রতিভার মুকুলটি যাতে তার বিশেষত্ব বজায় রেখে প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে সে জন্য নিয়ত তাঁকে উৎসাহিত করে এসেছি । আস সে পুষ্পবৃক্ষ আপন মাধুর্যে বিদ্যমান ।
তাই গ্রন্থকার শ্রী পীযূষকান্তি বিশ্বাসকে জানাই সুদীর্ঘ ও সাফল্যময় কাব্যজীবনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ।

                                                                          
২ জানুয়ারী ২০১৫                                     দিলীপকুমার বন্দোপাধ্যায়

নতুন দিল্লি                                     (প্রাক্তন প্রধান সম্পাদকঃ কথাঞ্জলী)